OrdinaryITPostAd

ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম জানুন সঠিক উপায়ে – সম্পূর্ণ গাইডলাইন

 বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় অনলাইন পেশা, আর এই পেশায় যাত্রা শুরু করার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হলো Fiverr

আপনি যদি ফাইবারে সফল হতে চান, তাহলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে – সঠিকভাবে গিগ (Gig) তৈরি করা

বিশেষ করে যারা নতুন, তাদের জন্য এটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সঠিকভাবে গিগ তৈরি করতে পারলে অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা ভালো থাকে। 

আর সঠিকভাবে গিগ তৈরি করতে না পারলে কেউ আপনার প্রোফাইলে ভিজিট করতে আসবেনা। 

তাই ফাইবারে সঠিকভাবে গিগ তৈরি করা উচিত।


এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানব:

  • ফাইবার গিগ কী,

  • কেন গিগ গুরুত্বপূর্ণ,

  • একটি সফল গিগ তৈরির ধাপগুলো,

  • এবং কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানোর কৌশল


ফাইবার গিগ (Fiverr Gig) কী?


Gig হল সেই অফার যা আপনি Fiverr-এ একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বায়ারদের দেন।

আপনি কী কাজ করেন, কত টাকায় করেন, কত দিনে করেন, কীভাবে ডেলিভার করেন – এই সমস্ত তথ্যই গিগ-এর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।





আপনার গিগের বর্ণনা দেখে ক্লাইন্টরা বুজবে আপনি কি কাজ করতে পারবেন।

তারপর তারা আপনাকে অর্ডার করবে। 

একটি গিগ হলো আপনার অনলাইন দোকানের মতো – যেখানে আপনি আপনার সেবা প্রদর্শন করেন।

বায়াররা গিগ দেখে আপনাকে কাজ দিতে আগ্রহী হন।



ফাইবারে গিগ কেন গুরুত্বপূর্ণ?


ফাইবার মার্কেটপ্লেসে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  ফাইবারে অর্ডার পাওয়ার জন্য গিট তৈরি করতে হয়। 

একটি গিগ দ্বারা বোঝা যায় কোন কাজ করার জন্য অর্ডার করতে হবে।

যদি আপনি একটি সুন্দর ও ভালোভাবে অপটিমাইজ করা গিগ  তৈরি করতে পারেন তাহলে:

  • আপনাকে বায়ারের সামনে তুলে ধরবে,

  • সার্চ র‍্যাঙ্কিং-এ উপরে থাকবে,

  • বায়ারদের আকৃষ্ট করবে,

  • কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে।

ফাইবারে গিগ তৈরির সঠিক নিয়ম – ধাপে ধাপে গাইড

১. গিগ টাইটেল নির্বাচন

আপনার কাজের বিষয়টি সংক্ষেপে ও আকর্ষণীয়ভাবে প্রকাশ করতে হবে।

টাইটেল যেন পরিষ্কার করে বলে দেয়, আপনি কী কাজ করবেন।

উদাহরণ:
"I will design a professional business logo within 24 hours"

টিপস: টাইটেল হবে 80 ক্যারেক্টারের মধ্যে এবং মূল কিওয়ার্ড অবশ্যই থাকতে হবে।


২. ক্যাটাগরি ও সাব-ক্যাটাগরি নির্বাচন

আপনার গিগ যে ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত, তা সঠিকভাবে নির্বাচন করুন।

যেমন:

  • Category: Graphics & Design

  • Sub-category: Logo Design

ভুল ক্যাটাগরি দিলে আপনার গিগ র‍্যাঙ্ক করবেই না।


৩. সার্ভিস ট্যাগস (Tags) নির্বাচন

এখানে সর্বোচ্চ ৫টি ট্যাগ দিতে পারবেন। এই ট্যাগগুলো সার্চ র‍্যাংকিং-এ আপনাকে হেল্প করবে।

উদাহরণ ট্যাগস:

  • logo design

  • business logo

  • minimalist logo

  • modern logo

  • creative design

প্রতিটি ট্যাগ যেন আপনার গিগের সাথে রিলেটেড হয়।


৪. প্রাইসিং (Pricing) সেট করা

এখানে আপনাকে নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রাইজিং সেট করতে হবে। Fiverr-এ আপনি ৩টি প্যাকেজ সেট করতে পারেন – Basic, StandardPremium। প্রতিটিতে আলাদা ফিচার ও দাম নির্ধারণ করতে হবে।

উদাহরণঃ

  • Basic: $10 – 1 logo concept

  • Standard: $30 – 2 logo concepts + source file

  • Premium: $50 – 3 concepts + social media kit

আপনার দক্ষতা অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করুন। খুব কম বা খুব বেশি মূল্য দিলে কাজ পাওয়া কঠিন হতে পারে।


৫. গিগ ডেসক্রিপশন (Gig Description)

এটি গিগ-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আপনাকে বিস্তারিতভাবে বুঝাতে হবে আপনি কী কাজ করবেন, কেন বায়ার আপনাকে বেছে নেবে, আপনি কিভাবে কাজটি করবেন ইত্যাদি।

গঠন হবে এভাবে:

  1. আপনি কে ও কী করেন

  2. আপনি কী কী সার্ভিস দেবেন

  3. কাজের সময় ও গুণগত মান

  4. কেন আপনাকে বেছে নেবে

ডেসক্রিপশনে হেডিং, বুলেট পয়েন্ট এবং কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। যেন সহজে পড়া যায়।


৬. FAQ যুক্ত করুন

কমপক্ষে ৫-৬টি Frequently Asked Questions (FAQ) দিন। বায়ারদের সম্ভাব্য প্রশ্ন ও উত্তর এখানে দিন।

উদাহরণ:

  • Q: আপনি কি সোর্স ফাইল দিবেন?

  • A: হ্যাঁ, Standard ও Premium প্যাকেজে সোর্স ফাইল প্রদান করা হবে।

এটি বায়ারের সন্দেহ দূর করে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়াকে সহজ করে।


৭. গিগ ইমেজ ও ভিডিও যুক্ত করুন

ছবির নিয়ম:

  • সাইজ: 1280x769px (মিনিমাম: 712x430px)

  • ফাইল সাইজ: সর্বোচ্চ 5MB

  • ইউনিক, ক্লিয়ার এবং প্রফেশনাল হতে হবে।

ভিডিওর নিয়ম:

  • দৈর্ঘ্য: সর্বোচ্চ 75 সেকেন্ড

  • সাইজ: সর্বোচ্চ 50MB

  • ভিডিওতে কাজের নমুনা, আপনার পরিচয় এবং সার্ভিস ব্যাখ্যা দিন।

ভিডিও থাকলে গিগের র‍্যাঙ্ক বাড়ে ৫০% পর্যন্ত।


৮. পোর্টফোলিও PDF যুক্ত করুন

আপনার পূর্ববর্তী কাজের ডেমো বা স্যাম্পলগুলো একটি PDF ফাইলে যুক্ত করুন।

  • ফাইল সাইজ: সর্বোচ্চ 50MB

  • স্পষ্ট ও গুণগত মানসম্পন্ন কাজ দেখান।

বায়ার আপনার দক্ষতা দেখতে পারবে এবং আস্থা বাড়বে।


ফাইবার গিগ তৈরি করতে যে বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে

১. ইউনিক টাইটেল ও কনটেন্ট

কোনভাবেই কপি-পেস্ট করবেন না। Fiverr কপি কনটেন্ট অনুমোদন করে না এবং র‍্যাঙ্কিং কমিয়ে দেয়।

২. ফোকাস কিওয়ার্ড

আপনার কাজের মূল কীওয়ার্ডটি অবশ্যই টাইটেল, ট্যাগ এবং বর্ণনায় ব্যবহার করুন।

৩. SEO অপটিমাইজড গিগ

গিগের প্রতিটি অংশ যেন সার্চ ইঞ্জিন ও Fiverr Algorithm-এর উপযোগী হয়।

৪. পরিষ্কার ছবি ও ভিডিও

আপনার ইমেজ বা ভিডিও দেখে যেন বায়ার বুঝতে পারে আপনি অভিজ্ঞ।

৫. গ্রামার চেক

ভুল ইংরেজি গ্রামার থাকলে প্রফেশনাল ইমপ্রেশন নষ্ট হয়। Grammarly বা Hemingway ব্যবহার করতে পারেন।


ফাইবার গিগ থেকে কাজ পাওয়ার টিপস

  • প্রফাইল ১০০% কমপ্লিট করুন

  • প্রতিদিন Fiverr-এ Active থাকুন

  • রেসপন্স টাইম কম রাখুন

  • বায়ার রিকোয়েস্টে নিয়মিত বিড করুন

  • ৩-৫টি গিগ আপলোড করে দিন (যত সম্ভব ভালো করে)

  • রিভিউ পাওয়ার পর নতুন গিগে আরও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে

উপসংহার – সফলভাবে ফাইবারে গিগ খোলার নিয়ম


আপনি যদি উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী গিগ তৈরি করেন, তাহলে ফাইবারে দ্রুত অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

মনে রাখবেন, ফাইবারে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি – তাই আপনাকে ইউনিক ও প্রফেশনাল হতে হবে।

একবার গিগ র‍্যাঙ্ক করলেই, Fiverr থেকে মাসে হাজার নয়, লাখ টাকা ইনকাম করাও সম্ভব। 

শুধু দরকার – সঠিক পরিকল্পনা, ধৈর্য্য, এবং মানসম্মত কাজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪